অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবো
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক । অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করব এই বিষটি সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই পোষ্ট আপনার জন্য।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি জনপ্রিয় অংশ। আপনি প্রায় সব ধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।
যেমন- ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ, ফেসবুক গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ, ওয়েবসাইট এছাড়ও যে সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া সাইট রয়েছে সবগুলোতেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় কর সম্ভব ।
তো চলুন জেনে নেয়া যাক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি , কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করব, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিংয়ের মধ্যে পার্থক্য কি? এবং কোনটা বেশি লাভ জনক?
এবং কোন কোন মার্কেট প্লেজ গুলোতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ক্যারিয়ার শুরু করা আপনার জন্য ভালো হবে সেই সম্পর্কে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস একটি নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে বিক্রির করার প্রক্রিয়া।
অনলাইনে এমন লাখো কোম্পানি আছে যারা অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নিয়ে থাকে। আপনি সেই সমস্থ কোম্পানিতে একজন অ্যাফিলিয়েট পার্টনার হিসেবে জয়েন করতে পারেন।
এবং সেই কোম্পানি গুলোর প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস আপনি প্রমোট করে সেল করার মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট আর্নিং করতে পারেন। আপনার মাধ্যমে যখনি কোনো একটি প্রডাক্ট সেল হবে, তখনি প্রত্যেকটি সেল থেকে আপনি একটি নির্দিষ্ট প্রফিট পাবেন।
যেটাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট সেল। অর্থাৎ আপনি কোনো প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারেন না বা আপনার কাছে কোনো প্রোডাক্ট নেই কিন্তু এমন ।
অনেক কোম্পানি আছে যাদের কাছে প্রচুর কোয়ালিটি ফুল প্রডাক্ট আছে। যেগুলোকে মানুষ বিশ্বাস করে এবং নিয়মিত তা কিনতেছে।
সেই প্রোডাক্ট গুলোকে আপনি আপনার অর্ডিয়েন্সের কাছে সেল করে দিবেন। এখন যতোগুলো আপনি সেল করতে পারবেন তার প্রত্যেকটি সেলসের জন্য আপনি প্রফিট পাবেন।
এটা অনলাইনে খুব জনপ্রিয় একটি উপায় ক্যারিয়ার তৈরি করার। অনলাইনে যতো গুলো প্রফেশন আছে তার মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যতম।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবো?
প্রিয় পাঠক আপনি যদি ইতোমধ্যে সিন্ধান্ত নিয়ে নেন যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করবেন তাহলে আপনাকে জানতে হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবো এই বিষয়টি জানতে হবে ।
একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার একাধিক উপায়ে অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রোমোশনের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট কমিশন আনিং করে থাকে। আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে চান তাহলে জনপ্রিয় কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রোমোশন করতে পারেন। যেমন-
- ব্লগিং এর মাধ্যমে
- নিস সম্পর্কিত গ্রুপ তৈরি করে
- ইউটিউব চ্যানেলে
- ইমেইল মার্কেটিং করে
- কুপন সাইট তৈরি
- সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং এর পার্থক্য কোথায়? এবং কোনটা বেশি লাভ জনক?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং তো আপনি তো বোঝা হলো এবার আসুন ব্লগিং কি সেটা জেনে নেই তাহলে পার্থক্যটা বুঝতে সহজ হবে।
সহজ কথায় ব্লগিং হলো লেখালিখি করা । মনে করুন আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে এবং সেই ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন। আপনি অলরেডি একটি ব্লগিং সাইট ভিজিট করছেন। এই রকম বিভিন্ন বাংলা সাইটে আপনি হয়তো নিয়মিত দেখে থাকেন ।
বিভিন্ন বাংলা লেখা পড়েন এই ওয়েবসাইট গুলোই কিন্তু আসলে ব্লগিং। এক একজন একেক বিষয় নিয়ে লিখছে। তো আপনিও একটি ওয়েবসাইট/ ব্লগ সাইট তৈরি করে ফেলতে পারেন এবং সেখানে আপনার যেই বিষয় গুলো আপনার ভালো লাগে এবং যেই বিষয়গুলো আপনি জানেন সেই বিষয় গুলো নিয়ে লেখালেখি শুরু করতে পারেন।
মনে করুন হেলথ সম্পর্কে আপনার ভালো ধরনা আছে,তাহলে আপনি হেলথ রিলেটেড বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে পারেন বা বিভিন্ন হেলথ টিপস সম্পর্কে জানাতে পারেন।
বা আপনি ভ্রমন করতে পছন্দ করেন তাহলে ভ্রমন এর জন্য যে গাইড লাইনগুলো আছে সেগুলো নিয়েও আপনি লেখালেখি করতে পারেন। আবার বিভিন্ন টেকনোলজি বিষয় নিয়েও আপনি লেখালেখি করতে পারেন।
এছাড়াও বিভিন্ন প্রডাক্ট নিয়ে রিভিউ বা কন্ট্রেন লেখালেখি করার মাধ্যমে আপনি ব্লগিং করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে ব্লগিংয়ের ছোট্ট একটি অংশ। ব্লগিং হচ্ছে একটি কম্পিলিট সলুশন।
আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ব্লগিং বা কন্ট্রেন রাইটিং করার মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও করতে পারবেন এবং google adsense এর মাধ্যমে আর্নিং করতে পারবেন।
আবার বিভিন্ন কোম্পানি থেকে স্পনসরসিভ নেয়ার মাধ্যমে আপনি আর্নিং করতে পারবেন। আবার চাইলে আপনি আপনার ওয়েবসাইটিকে থেকে সেল করে দেওয়ার মাধ্যমে আর্নিং করতে পারবেন।
ব্লগিংয়ে মাল্টিপল রেভিনিউ সোর্স আছে। আর সেই মাল্টাপল রেভিনিই সোর্স গুলোর মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে একটি। কিন্তু অনেকের মনে এমন কিছু প্রশ্ন আসতে পারে যে কয়টি কন্টেন্ট আমার ওয়েবসাইট বা ব্লগে পাবলিস করবো?
কন্টেন্ট গুলো কত শব্দের হতে হবে? এর উত্তর হচ্ছে আপনি যতো দিন ব্লগিং করবেন আপনাকে ততো দিন এই কন্টেন্ট পাবলিস করে যেতে হবে। কন্টেন্ট পাবলিস করার কোনো লিমিট নেই।
কোনো কারনে আপনার ওয়েবসাইট থেকে যদি কেউ প্রোডাক্ট নাও ক্রয় করে তারপরেও কিন্তু কোনো সমস্যা হবে না কারন আপনার ওয়েবসাইটে Google AdSense এর মাধ্যমেও আর্নিং হতে থাকবে।
অর্থাৎ ব্লগিং করলে আপনি শুধু মাত্র অ্যাফিলিয়েট এর উপরই নির্ভর তা কিন্তু না। আপনার আরো অনেক গুলো উপায় থাকবে যে গুলোর মাধ্যমে আপনি দারুন একটি ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে পারবেন।
শুধু মাত্র অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর উপর আপনি নির্ভর করবেন না। তাহলে আপনি একটি মাত্র আর্নিং সোর্সের সাথে কানেক্টেড থাকবেন। আর যখন আপনি ব্লগিং টা শিখে নিয়ে এটা সঠিক ভাবে শুরু করবেন তখন আপনি মাল্টিপল রেভিনিউ সোর্স জেনারেট করতে পারবেন আপনার ওয়েব সাইট থেকে।
অনেক আইটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অ্যাফিলিয়েট কোর্স করিয়ে থাকে আপনি চাইলে তাদের থেকে একটা কোর্স করে নিতে পারেন। আর যদি কোর্স ক্রয় করার সম্ভব না হয় তাহলে আপনি ইউটিউবেও অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন যেখান থেকেও আপনি শিখি নিতে পারবেন।
তো ফাইনালি যেটা বলবো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং এর মাধ্যমে একটা বড় পার্থক্য রয়েছে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে শুধু একটি অংশ। কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিজ যদি আপনি সেল করে দেন তাহলে শুধু তার বিনিময়ে আপনি প্রত্যেকটা সেল থেকে একটা নির্দিষ্ট প্রফিট পাবেন।
আর ব্লগিং হচ্ছে আপনার নিজেস্ব একটি ওয়েবসাইট থাকবে যেখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর কন্টেন্ট রাইটিং করবেন। সেই কন্ট্রেন রাইটিং এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন উপায়ে আর্নিং জেনারেট করতে পারবেন।
আর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে ব্লগিং ক্যারিয়ারের একটি আনিং সোর্স মাত্র। এটা ছাড়াও ব্লগিং থেকে আরো অনেক গুলো সোর্স আছে যেখান থেকেও আর্নিং জেনারেট করা যায়-
যেমন, google adsense,স্পনসরসিভ, ওয়েবসাইট সেল করা, পাশাপাশি আপনার নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস থাকলে সেটিও সেল করতে পারবেন আপনার ভিজিটরদের কাছে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম এর সেরা ১০টি উপায়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্ল্যাটফর্ম
এখন চলুন জেনে নিই কোন কোন মার্কেটপ্লেস গুলো সবচেয়ে ভালো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য। অনলাইনে লক্ষ লক্ষ কোম্পানি আছে যারা অ্যাফিলিয়েট পার্টনার নিয়ে থাকে।
কিন্তু সব গুলো মার্কেটপ্লেস আসলে সেরা নয় আপনার ব্লগিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যারিয়ারটি শুরু করার জন্য। বর্তমানে সেরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্ল্যাটফর্ম
গুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যামাজন,আলি এক্সপ্রেস ও থিমফরেস্ট । এছাড়াও বিভিন্ন হোস্টিং কোম্পানির সাথে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন যেমন- Bluehost, Hostinger ও Siteground ।
এই মার্কেটপ্লেস গুলো হচ্ছে সারাবিশ্ব খুবই জনপ্রিয়। আমাজন এবং আলি এক্সপ্রেস এই দুটি হচ্ছে সেম টাইপের কোম্পানি। তাই অনলাইন ভিত্তিক শপিংমল যেখানে মানুষের নৃত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সমস্ত প্রোডাক্টি পাওয়া যায়।
এবং পুরো পৃথিবীতে লক্ষ কোটি মানুষ এই মার্কেট প্লেস গুলোতে প্রতিনিয়ত শপিং করে। পাশাপাশি থিমফরেস্ট হচ্ছে একটি সফটওয়্যার ও ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর মার্কেটপ্লেস।
এখানে শুধু মাত্র সফটওয়্যার বিক্রি হয়। আপনি এই মার্কেট প্লেস গুলোতে নিশ্চিতায় জয়েন করে আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
এবং আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই মার্কেটপ্লেস গুলোর প্রোডাক্ট বা সার্ভিজ সেল করে অ্যাফিলিয়েট আর্নিং জেনারেট করতে পারেন। সাথে তো Google AdSense সহ আরো অন্যান্য উপায় গুলো তো আছেই।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আশাকরি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব ? আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার এই সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারনা হয়ে গেছে । অ্যাফিলিয়েট মাকেটিং ও ব্লগিং সম্পর্কে নানা প্রয়োজনীয় আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটি ভিজিট করুন।