ঘরে বসে ইনকাম করার উপায় । অনলাইন ইনকাম এর সেরা ১০ উপায়

অনলাইনে টাকা আয় (Online Income) এ কথাটা বর্তমানে এতো ভাইরাল যে আপনি যেখানেই থাকেন না কেন সেইখানে যদি আয় করার কোনো বিষয়ে আলোচনা হয় তাহলে অনলাইনে আয় এই কথাটি থাকবেই। তাছাড়া বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া সহ 

নানা ধরনের প্লাটফরমে এই অনলাইনে আয় নিয়ে বিজ্ঞাপন এবং কোর্সের তো অভাব নাই । এখন কথা হচ্ছে আসলেই কী অনলাইনে ইনকাম করা যায়? আপনার হাতে থাকা অবসর সময় বা সেমিস্টার ব্রেকের সময় কাজে আপানিও কী টুকটাক ইনকাম চান?

বা আপনি যদি ইতোমধ্যে অনলাইন ইনকাম করার নানান উপায় খুঁজেছেন কিন্তু সঠিক পথটা বেছে নিতে পারছেন না, অনেকেই আবার বুঝতে পারছেন না কোনটা দিয়ে শুরু করবেন আজকের এই পোষ্টি তাদের জন্যই লিখা। 

তাহলে চলুন অনলাইনে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এক এক করে জেনে নেয়া যাক-

ঘরে বসে ইনকাম করার উপায় । অনলাইন ইনকাম এর সেরা ১০ উপায়

অনলাইনে ইনকাম সম্পর্কে কিছু কথা

বর্তমানে আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কোনো না কোনো ভাবে প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে রয়েছি। আর প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইন্টারনেট এর সহায়তায় খুব সহজেই একটা ভালো পরিমানের আয় অনলাইন থেকে উপার্জন করছে। আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন এই অনলাইন ইনকাম (Online Income) করে তাদের জীবিকা নিবার্হ করছে।

ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় বলার আগে আপনি একটি কথা মাথায় রাখতে হবে এই সেক্টরে আপরাকে কেউ গ্যারান্টি দিতে পারবো না যে আপনি শুরুতেই লাক্ষ  টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

তবে আপনার যদি ধৈর্য থাকে এবং আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেন, সেক্ষেত্রে অনলাইন থেকে একটা বড় পরিমান আয় আপনিও করতে পারবনে।

অনলাইন আয় এর সেরা ১০টি উপায়

অনলাইনে আয় করার নানা সুযোগ তৈরির সাথে সাথে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের প্রতারণার মূলক ফাঁদ। সেই ফাঁদ থেকে আপাকে মুক্ত রাখতে আমরা আজকের এই পোস্টে এমন ১০টি উপায় জানাতে চলেছি যেগুলো থেকে আপনি নিশ্চিন্তে আয় করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ । তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়টি জেনে নিই-

১। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) করে আয়

বর্তমানে সারা বিশ্বেই ইনকামের অনেক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) করে ইনকাম করা অনেক সহজ একটি মাধ্যম। আর এই মাধ্যমে ইনকামটাও বেশ ভালো। 

কিন্তু এই উপায়ে ইনকাম করার ব্যপারটা অনেকের কাছে অজানা। চলুন আগে জেনে নিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং জিনিটা আসলে কী ? 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে কোনো পন্য বা পরিশেবা যদি আপনির প্রচার করার মাধ্যমে কেউ তা ক্রয় করে তাহলে আপনি সেই পন্য বা পরিবশেবার ক্রয়মূল্যের একটা নির্ধারিত কমিশন আপনাকে দেওয়া হবে আর এটিকে সহজ ভাষায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।

এক্ষেতে আপনার শেয়ার করা পন্যটি মূল্য কিন্তু বৃদ্ধি হবে না। আপনার ক্রেতা সঠিক মূল্যেই পন্যটি ক্রয় করতে পারবেন। 

তাছাড়া নানা সময়ে পন্যের বিভিন্ন অফার আপনাকে জানানো হবে। একটি নিদিষ্ট কোডের মাধ্যেমে আরো কম মূ্ল্য অফার করে সেল আনতে পারবেন। এভাবে আপনি যতো পন্য বিক্রয় করতে পারবেন আপনি তত বেশি কমিশন লাভ করবেন । আর এর জন্য আপনাকে কোনো প্রকার ইনভেষ্ট করা লাগবে না ।

সারা বিশ্বে হাজার হাজার ই-কমার্স কোম্পানি রয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকগুলো কোম্পানি আছে যারা সারা বিশ্বেই পন্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে। আপনি সেখানে একটি অ্যাফিলিয়েট অ্যাকাউন্ট তৈরি করে খুব সহজেই তাদের মেম্বার হতে পারবেন। 

তারপর তাদের ওয়েবসাইট থেকে পণ্যের লিংক নিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত হয়ে তাদের পন্যের প্রচার করবেন । 

যদি কোনো ব্যক্তি আপনার প্রচার করা লিংক থেকে সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে কোনো পন্য ক্রয় করে তাহলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন আপনি পাবেন । তবে আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং সর্ম্পকেও সুস্পষ্ট ধারনা তৈরি করতে হবে।

সারা বিশ্বে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য সাইটের মধ্যে রয়েছে, অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, আলি এক্সপেস, ই বে ইত্যাদি । আপনি যদি আমাদের দেশের কোম্পানির সাথে অ্যাফিলিয়েট করতে চান সেটিও করতে পারবেন । 

বর্তমানে বাংলাদেশের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য সাইটের মধ্যে রয়েছে, দারাজ, বিডিশপ, রকমারি, ১০মিনিট স্কুল ইত্যাদি ।

২। ব্লগিং (Blogging) করে আয়

ব্লগিং করে আয় একটি নতুন পথে হতে পারে আপনার আয় বাড়ানোর জন্য । এর জন্য আপনাকে প্রথমে জানতে হবে ব্লগিং কী ? এক কথায় বলতে গেলে ব্লগিং অর্থ লেখালেখি করা ।

অর্থাৎ আপনি যে সাইটিতে আছেন এটা একটি ব্লগসাইট এবং যে আর্টিকেল বা পোষ্ট দেখতে পাচ্ছেন বা পড়ছেন এই প্রক্রিয়াকে যৌথভাবে ব্লগিং বলা হয়। আর এই ব্লগিং একটি মুক্ত পেশা । 

আপনি যে পেশাতে থাকেন না কেন চাকরিজীবী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী বা অন্যকিছু আপনার সেই কাজের পাশাপাশি মোটামোটি ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় বের করতে পারলেই আপনিও ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে পারবনে। 

অনেকে আছে যারা শখ করে অনেক কিছু লিখে থাকেন । লেখালেখিতে যদি আপনার আগ্রহ থাকে, তাহলে আপনার এই আগ্রহ টাকে কাজে ইনকাম এর একটি মাধ্যম তৈরি করে নিতে পারেন। 

যে বিষয়ে লেখালিখি করতে নিজের কাছে ভালো লাগে অথবা নিজের জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সে বিষয়ে ব্লগিং শুরু করলে অনেক দুর এগোতে পারবেন। লেখালিখির বিষয়টি বলতে গেলে আপনি শুরুতে একটি নির্দিষ্ট নিশ নিয়ে কাজ করতে পারেন । 

এখন প্রশ্ন আসতে পারে নিশটা আবার কী? নিশ হলো একটি বিভাগ। যেমন, টেকনোলজি, রান্না, খেলাধুলা, জীবনী, ভ্রমন, শিক্ষা, রান্না ইত্যাদি । 

এরমধ্যে মনে করুন আপনি টেকনোলজি বিভাগটি নিয়ে খুব ভালো বোঝেন তাহলে আপনি এইটি নিয়েই একটি ব্লগসাইট তৈরি করতে পারেন। উদাহরণ স্বরূপ মোবাইল সম্পর্কে আপনি ভালো জানেন, যেমন একটি মোবাইলে কী আছে, মোবাইলটি কেমন হবে? কেমন দামে বর্তমানে বাজারে বিক্রয় হচ্ছে, বাজেট অনুযায়ি মোবাইল কেনা ঠিক হবে কী ইত্যাদি । 

অথবা আপনি ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করেন সেক্ষেত্রে ভ্রমন নিশ সিলেক্ট করবেন। যেখানে ঘুরতে গেছেন সেখানে গিয়ে কি কি অভিজ্ঞতা হয়েছিলো, সহজে সেখানে কীভাবে যাওয়া যায় সেটি নিয়ে একটি বিস্তারিত ব্লগ লিখে ফেলতে পারেন। এখন কথা হচ্ছে সবই তো বুঝলাম কিন্তু লেখা লিখি করবো কোথায়?

এক্ষেত্রে আপনি যদি কোনো প্রকার টাকা পয়সা খরচ না করতে তাহলে গুগলে নিজেস্ব প্লাটফরম ব্লগার দিয়ে  একটি ব্লগ সাইট নিজেই বানিয়ে নিতে পারেন। এখন ব্লগার এর জন্যও অনেক সুন্দর সুন্দর ফ্রি থিম আপনি পেয়ে যাবেন ।

যদিও ফ্রি ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করতে একটু সমস্যা ফেস করবেন তারপরেও বলবো ফ্রি দিয়েই শুরু করতে । 

শুরু করার পর যদি আপনি কাজে করে তৃপ্তি পান, আপনার কাছে কাজটি ভালো লাগে তাইলে তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ করে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করে একটি ফ্রি থিম দিয়েই ওয়ার্ডপ্রেসে কনভার্ট হতে পারবেন ।

মনে রাখবেন একবার যদি আপনা ব্লাগ সাইট দাড় করাতে পারেন তাহলে আপনাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না । 

কারন একটি ব্লগসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স ইনকাম ছাড়াও নানা মাধ্যমে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। তাছড়া আপনার যদি কম্পিউটার বা লেপটপ না থাকে তাহলেও আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়েও ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

৩। ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন ইনকাম

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে ইনকাম এটি সবার পছন্দের শীর্ষে । ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি মুক্ত পেশা যেখানে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার  দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কোথাও যেতে হবে না সম্পুর্ণ কাজ আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন।

আমাদের দেশের বেকারত্ব হার কমাতে ফ্রিল্যান্সিং অনেক বড় ভুমিকা পালন করছে। দেশের ফ্রিল্যান্সাররা Fiverr, Freelancer, Upwork ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে অনেক বড় বড় মানের কাজ করে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে তুলে ধরছে এক অন্য মাত্রাই । আর তার সাথে প্রতি মাসে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স নিয়ে আসছে আমাদের দেশে ।

ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন ইনকাম কিভাবে শুরু করবেন ?

ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন ইনকাম করতে চাইলে শুরুতে আপনার দরকার একটি নির্দিষ্ট বিষয় দক্ষতা। সেটি হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ফটো এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কপি রাইটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, লোগো ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কটিং, ডেটা এন্ট্রি ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই কোনো একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আবার আপনি যদি একাধিক কাজের উপর দক্ষ হতে পারেন তাহলে আপনার ইনকামের সুযোগ অন্য দের থেকে বেশি থাকবে ।

এরপর আপানকে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে(Fiverr, Freelancer, Upwork)ইত্যাদিতে একাউন্ট খুলতে হবে এবং সুন্দর করে একটি পোর্টফোলিও লিখতে হবে। আপনি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ, কোন কাজে বেশ পারদর্শী, কাজ করতে কেমন পরিমান সময় নিবেন, কত টাকা চার্জ করবেন ইত্যাদি যুক্ত করবেন ।

 এছাড়াও আপনার কাজের যদি পূর্বের কোনো অভিজ্ঞতা থাকে বা আপনি যে কাজ যানেন তার কোনো সার্টিফিকেট পোর্টফোলিও তে যুক্ত করতে পারেন ।

এতে করে বায়ার আপনার পোর্টফোলিও দেখে আপনাকে কাজে দিতে পারে । যেহেতু প্রথম পর্যায়ে কাজ পেতে কষ্টকর তাই পরামর্শ থাকবে যতটা সুন্দর করে সম্ভব চেষ্টা করবেন পোর্টফোলিও তৈরি করতে । কেননা প্রথম পর্যায়ে এই পোর্টফোলিও আপনাকে কাজ পেতে সাহয্য করবে। 

প্রথম কাজটি পাওয়ার পর চেষ্টা করবেন সবটুকু দিয়ে কাজটি করার । আপনার সম্পুর্ণ করা কাজটি পেয়ে যদি বায়ার খুশি হয় তাহলে আপনাকে সুন্দর একটি রিভিউ দিবে। এরপর দেখবেন আপনার কাজ আসতেই থাকবে ।

৪। ড্রপশিপিং (Drop shipping) করে ইনলাইন ইনকাম

ড্রপশিপিং নিয়ে কথা বলার পূর্বে চলুন যেনে নিয় ড্রপশিপিং কী? ড্রপশিপিং হলো এমন একটি ব্যবসায়িক মডেল যেখানে একজন ব্যবসায়িক কোনো পণ্য স্টক না করে, গ্রাহকের অর্ডার প্রদান করার জন্য একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

চলুন বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝে নেয়া যাক । মনে করুন, আপানার আশে পাশে কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান আছে যারা নিজের পন্য তৈরি করে অথবা বাইরে থেকে হাজার হাজার পন্য নিয়ে এসে তাদের স্টকে রাখে ।

 এখন তারা যে পন্য ৭০০ টাকা করে বিক্রয় করে সেই পন্য সর্ম্পকে আপনি মার্কেটে খোজ নিয়ে দেখলেন সেটি আপনি ১৫০০ টাকা ধরে বিক্রয় করতে পারবেন । এবার আপনি তাদের সাথে কথা বলে রাখবেন যাতে করে আপনার কোনো গ্রাহক যখন পন্য অর্ডার করবে আপনি জানাবেন এবং তাদের থেকে ৭০০ ধরে নিবেন ।

এতে করে আপনার কোনো পন্য স্টক করা লাগবে না তারাই স্টক করবে এবং আপনার গ্রাহকদের নিকট পন্য তারাই ডেলিভারি করবে আপনার নামে বা আপনার দোকানের নামে ।

এখন বলতে পারেন এই রকম প্রতিষ্ঠান কোথায় পাওয়ার যায়? আপনি যদি গুগল বা ইউটিউবে ড্রপশিপিং কী ভাবে করবো বলে সার্চ করেন তাহলে অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন ।

আমার জানা মতে বাংলাদেশের একটি অনলাইন সাইট বিডিশপ যারা ড্রপশিপিং এ কাজ করছে ।  আপনি চাইলে তাদের সাতে যোগাযোগ করতে পারেন ।

ড্রপশিপিং (Dropshipping) করে অনলাইন ইনকাম করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি একেবারে অল্প পুজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন । আপনাকে কোনো পন্য স্টক করতে হবে না তাই বাড়তি কোনো চিন্তা থাকেব না । 

৫। ছবি বিক্রি (Sell Photos Online) করে অনলাইন ইনকাম

বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন হাতে নায় এমন মানুষের সংখ্যা নাই বললেই চলে । আবার এর মধ্যে অনেকেই আছের তাদের কাছে তো ক্যামেরাও রয়েছে । আপনি চাইলে আপনার হাতে থাকা এই স্মার্টফোন বা ক্যামেরা কে কাজে লাগিয়ে একটি ভালো মানের আয় করতে পারেন । যারা দেশ বিদেশ ট্রাভেল করেন তাদের জন্য তো এক অন্য রকম সুবিধা ।

আপনার ভ্রমন কারও হবে আর তার সাথে ক্যাপসার করা সুন্দর সুন্দর ছবি গুলো সেল করে একটি ভালো মানের আয়ও হয়ে যাবে । এমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা মূলত এই ফটোগ্রাফি কেই আয়ের উংস হিসাবে ধরে কাজ করে যাচ্ছে । 

আপনার তোলা আকর্ষণীয় ছবিগুলো যদি একটু এডিট করতে পারেন তো ভালো অথবা  “র” (Raw) ফাইলই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারবেন। এমনও আছে যারা প্রতি পিস ছবি সেল করে ৫০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০০ ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকে।

ফটোগ্রাফারদের অনলাইনে ছবি বিক্রির করার জন্য অনেক ওয়েবসাইট আছে  তার মধ্যে, Shutterstock, GettyImages, iStock, Dreamstime, Adobe Stock, 500px, Envato ইত্যাদি খুবই জনপ্রিয় এবং সব থেকে বেশি পে করে থাকে। তাছাড়া আপনিও চাইলে নিজে একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনার তোলা ছবি বিক্রয় করতে পারেন ।

আপনার আপলোড করা ছবি যে ওয়েবসাইটে আপলোড করবেন তারাই আপনার ছবি বিক্রয় করে দিবে। এই সব ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিরা তাদের গ্রাফিক ডিজাইন করার জন্য, বিভিন্ন বইয়ের কাভারে, ব্যানার, ফেসটুন তৈরি করতে ছবি ক্রয় করে থাকে।

৬। অনলাইনে পড়িয়ে ইনকাম

আমরা অনেকে আছি যারা কোনো কোনো বিষয়ে পারদর্শি। আপনি চান টিউশন করাতে কিন্তু তেমন ছাত্রছাত্রী না পাওয়ার সেটা আর হয়ে উঠে না। তাই আপনির জন্য হতে পারে অনলাইন টিসশন একটি মাধ্যম ।

দিন যত সামনের দিকে এগোচ্ছে ,অনলাইন টিউটরদের চাহিদা বাড়ছে। আপনি যদি কোনো বিষয়ে পারদর্শি হন, তবে অনলাইনে সে বিষয়ে শিক্ষকতা করতে পারেন। 

বর্তমানে অনলাইন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আছে যেখানে যেখানে সুবিধামতো সময়ে পড়াতে পারেন আবার চাইলে নিজেই একটা কোর্স চালু করতে পারেন। বাসায় বাসায় গিয়ে পড়ানো বা একটি কোসিং সেন্টার খুলে পড়ানো দুইটাই কষ্ট সাধ্য ব্যপার ।

অন্যদিকে কোচিং সেন্টারের জায়গা জোগাড় করাও একটি কষ্টসাধ্য বিষয়। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে ঘরে বসেই অনলাইনে ছাত্রদের পড়িয়ে অর্থ উপার্জন করে নিতে পারেন। 

আমাদের দেশেও এরকম বেশ কয়েকটি প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে যেখানে অনলাইনে পড়ানো হয়ে। এর মধ্যে টেন মিনিট স্কুল, শিখো, বন্দিপাঠশালা ইত্যাদি । শুরুতে হয়তো বিভিন্ন বাধা বিপত্তি আসবে, কিন্তু পরবর্তীতে অনেক সুবিধা পেতে পারেন এখানে থেকে। টিউশন সম্পর্কৃত কিছু ওয়েবসাইট নিছে দিয়ে দিলাম নিজ দায়িত্বে দেখে নিবে

  • caretutors.com
  • dikkha.com
  • tutorsheba.com
  • bdtutors.com
  • deshtutors.com
  • dhakatutors.com
  • tutionmedia.com

৭। অনুবাদ করে ইনকাম 

আপানার যদি ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি অন্য কোনো ভাষা যেমন, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, আরবি, জার্মানসহ অন্যান্য ভাষা জানা ধাকে তাহলে আপনি অনুবাদ করার মাধ্যমেও অনলাইনে ইনকাম করতে পারবের। এই কাজ গুলো সাধারণত একটি ডকুমেন্ট আপানকে দিবে এবং বায়ার আপনাকে বলে দিবে সেটি কোন ভাষায় অনুবাদ করতে হবে ।

সেটি হতে পারে  ইংরেজিতে অনুবাদ বা ইংরেজি থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এ ধরনের কাজ পাবেন। এছাড়াও Gengo,Translators Cafe, gotranscript এগুলো ঘুরে দেখতে পারেন ।

৮। ইউটিউব ভিডিও তৈরী করে ইনকাম

‘ইউটিউব’এই নামটি আমাদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাম। ইউটিউব ব্যবহার করে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। ইউটিউব থেকে আয় করা যায় এই কথাটি সাবাই জানলেও কীভাবে ইনকাম হয় এই বিষয়টি অনেকের কাছেই অজানা।

ইউটিউবে আমরা যখন কোনো ভিডিও প্লে করি তখন ভিডিওর শুরুতে, মাঝে বা শেষে যে অ্যাড গুলো আসে এই অ্যাড থেকেই মূলত ইনকাম হয়ে থাকে। 

এই  অ্যাড থেকে যে ইনকাম হয় তার প্রায় ৫১% ইউটিউব রেখে দেয় । বাকি ৪৯% চ্যানেল ওনার পেয়ে থাকে। আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি কে কাজে লাগিয়ে আপনিও ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। 

কীভাবে শুরু করবেন ? 

ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে প্রথমে আপনাকে একটি চ্যানেল তৈরি করতে হবে। তারপর সেটিকে কাস্টমাইজ করে নিতে হবে। চ্যানলে সম্পর্কে অ্যাবাউটে লিখবেন আপনি কোন বিষয়ে ভিডিও তৈরি করতে চান । যাতে করে আপনার চ্যানেলে প্রতি ভিউয়ার দের একটি আস্থা তৈরি হয়।

কোন বিষয়ে বা কী নিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানাবেন ?

সব কিছুই তো বুঝলাম কিন্তু ভিডিও বানাবো কী নিয়ে? এটির উত্তর হচ্ছে, এমন কোনো বিষয় সিলেক্ট করবেন যেটি সম্পর্কে আপনি কমবেশি জানেন বা যে বিষয়টি আপনার কাছে অত্যন্ত প্রিয় যেটি করতে আপনার বেশ ভালো লাগবে । 

এরপর সেই সম্পকৃত কিছু চ্যানেল ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করুন । তাদের ভিডিও দেখুন আর নিজে সেখান থেকে কিছু শেখার চেষ্ট করুন।

ভিডিও তৈরি করতে কোন অ্যাপস ব্যবহার করবো ?

বর্তমানে মোবাইলের জন্যও অনেক পাওয়ারফুল অ্যাপস আছে যেগুলো দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করা থেকে শুরু করে ভিডিও এডিট ও আপলোড পর্যন্ত সমস্ত কাজ করতে পারবনে। ভিডিও তৈরি করতে কিছু জনপ্রিয় অ্যাপস- 

স্কিন রেকর্ড করার জন্য mobizen ও du recorder ভিডিও এডিট করার জন্য kineMaster,CapCut বা Inshot অডিও রেকোর্ড করতে Recforge অডিও এডিট করতে Lexis audio editor বা Dolby on। পারসোনালি আমার কাছে এই গুলো ভালো মনে হয়েছে তাই আপনাদের বলে দিলাম। এছাড়ও অনেক অ্যাপস পেয়ে যাবেন । 

আর যারা কম্পিউটার ব্যবহার করে কাজ করবেন তাদের জন্য- ভিডিও এডিট করতে ফিলমোরা, এডোবি আফটার ইফেক্ট, এডোবি প্রিমিয়ার প্রো ,ক্যাপকাট ইত্যাদি । এবং অডিও রেকোর্ড করতে অডাসিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন ।

ভিডিও তৈরী করে ইউটিউবে আপলোড করার পর আপানার চ্যানেলে যখন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং বিগত ৩৬৫ দিনে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ হবে তখন গুগল এডসেন্স এর মনিটাইজেশন প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে আয় করতে পারবেন। 

এছাড়াও যখন আপনার চ্যানের পপুলার হবে তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সহ স্পন্সর এর মাধ্যমে আয় করতে পারবেন । 

৯। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে আয় 

একটি সময় ছিল যখন আমরা ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট সহ নানা ধনের সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতাম । কিন্তু বর্তমানে এই সমস্ত সোশ্যাল সাইটগুলো শুধু যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার হয় না এখন থেকেও মানুষ এখন লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। 

ইউটিউবে আপনি যে ভিডিও দিয়ে আয় করবেন সেই একই ভিডিও দিয়ে আপনি এই সমস্ত সোশ্যাল সাইডে আপলোড করেও আয় করতে পারবেন। সুতারাং অনলাইনের আয়ের সেরা ইনকাম টপিক হলো ভিডিও । 

জনপ্রিয় এই প্লাট ফরমের যেকোনো টিতে আপনি যদি একবার ভাইরার হতে পারেন তো আপনাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না । 

ইউটিউবের মতো এদের ও কিছু শর্ত আছে যেগুলো পূর্ণ হলেই আপনির আয় শুরু হয়ে যাবে । যেমন ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম এর ক্ষেত্রে ৫ হাজার ফলোয়ার এবং ৬০ হাজার মিনিট ওয়াচ টাইম হলে আয় শুরু হয়। ভয়ের কিছুই নাই, ইউটিউব এর থেকে দ্রুত ফেসবুকে এই শর্ত পূর্ণ হয়ে যায়।

১০। ডোমেইন নেম বেচা-কেনার মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার একটি  অন্যতম মাধ্যম হলো ডোমেইন ফ্লিপিং করা । অর্থাৎ একটি ডোমেইন নেম কম মূল্যে ক্রয় করে সেটিকে বেশি দামে বিক্রি করা।

এই মাধ্যমে আপনি ইনকামের কথা শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে ।  আপনি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা খরচ করে একটি ডোমেই ক্রয় করে সেটি আলদা ওয়েবসাইটে বিক্রয় করতে পারনে আপনার ইচ্ছে মতো দামে । সেটা আপনি ১কোটি বা তার বেশিতেও নিয়ে যেতে পারেন ।

কেননা ডোমেইন নেম এমন একটি নাম যেটি কেউ একবার ক্রয় করে নিলে ঐ নামে আর কোনো ব্যক্তি ক্রয় করতে পারবেনা যদি আপনি না দেন । এটি একটি লাভ জনক কাজ হলেও বাংলাদেশে এই কাজ তেমন কাউকে সচারাচর করতে দেখা যায় না ।

তাই আপনাকে এই সম্পর্কে জানতে একটু কষ্ট হতে পারে । এটি শুরু করার পূর্বে আপনি অবশ্যই ভালোমত গবেষনা করে নিবেন ।

কোন ধরনের ডোমেইন নেম-এর চাহিদা বেশি, সেটি কেমন দামে বিক্রয় করা যাবে, কতদিন রাখবেন এই সম্পর্কে জানতে হবে। তারপর ডোমেইন নেম ক্রয় করবেন । ডোমেইন বেচা-কেনার সেরা কিছু মার্কেটপ্লেসের নাম দিয়ে দিলাম এগুলো ঘুরে দেখতে পারেন - GoDaddy, Freemarket, Namecheap auction, Sedo, Flippa

আমাদের শেষ কথা

অনলাইনে কোনো টাকা আয় করার জন্য যখন ভালা কোনো সাইট সম্পর্কে শুনি তখন আমাদের মন খুশিতে ভরে যায় কিন্তু যখনি শুনি যে যেখানে বিকাশ পেমেন্ট নাই সেই খুশি আর বেশি সময় টিকে থাকে না ।

উপরে আমরা যেই ইনকাম সাইটগুলো সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্ট করেছি তার কোনোটিই হয়তো সরাসরি বিকাশ পেমেন্ট করবে না । এরজন্য আপনাকে আলাদা মাধ্যমে ব্যবহার করতে হবে । তবে আপনি ইনকাম করা টাকা নিজের পকেটে আনতে পারবেন এটা নিশ্চত ।

বর্তমানে আমাদের দেশেও অনেক অনেক ভালো ভালো অনলাইন ইনকাম সাইট তৈরি হচ্ছে যারা সরাসরি বিকাশ পেমেন্ট করে । কিন্তু যে বিদেশি সাইটগুলো আছে তারা সরাসরি বিকাশ পেমেন্ট করবেনা ।

তাই সাইটে কাজ শুরুর পুর্বে অবশ্যই পেমেন্ট মাধ্যম দেখে নিবেন । আমরা এখানে অনলাইন আয় এর সেরা ১০টি উপায় এবং বিভিন্ন অনলাইন ইনকাম টিপস আপনাদের বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি ।

আশা করি সম্পুর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি একটি সঠিক সিধান্ত নিতে পারবেন। তারপরেও মানুষ মাত্রায় ভুল তাই ভুল হলে তা ঠিক করার জন্য আপনার মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন না । 

আর যদি কোনো বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে সেটি কমেন্ট বাক্সে জানাতে ভুর করবেন না সেই সাথে আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই প্রিয়জন দের নিকট শেয়ার করবেন ।ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url