ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার - সফল হওয়ার সেরা উপায়
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারঃ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ‘ফিউচার অব জব সার্ভে- ২০২০’ প্রতিবেদনে প্রকাশ করে- ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন।
সেখানে দেখা যায় শীর্ষ পাঁচে স্থান পেয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার । সুতরাং যারা ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করতে যাচ্ছেন তারা আশা করে একবারে ভূল পথে হাঁটছেন না।
এখন আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই পোষ্টি আপনার জন্য।
এই পোষ্টিতে ডিজটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো । তাহলে চলুন এক এক করে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানা শুরু করা যাক-
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার |
ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কিছু কথা
প্রথমে এটা জানে নেয়া যাক ডিজিটাল মার্কেটিং কী? সাধারণত অর্থে একটি পণ্য প্রচার করার মাধ্যমে বিক্রি করার কৌশলকেই মার্কেটিং বলা হয়।
আর এই প্রচারের কাজটি যখন ইন্টারনেট ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয় তখন তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে ।
এমন একটা সময় ছিল যখন কোনো কোম্পানি তার পণ্যের মার্কেটিং করতে ফ্রি পণ্য বিতরণ করতো । তারপর একটি সেরা মাধ্যম এলো টেলিভিশন বিজ্ঞাপন।
তখন কোম্পানি গুলো টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের পন্যের মার্কেটিং শুরু করে। বর্তমানে ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যম ।
যেহেতু দিন যত সামনের দিকে এগোচ্ছে মানুষ ততো প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। তাই সঠিক মানুষের কাছে পণ্যের প্রচারনার জন্য ডিজিটাল মার্কেটার এর চাহিদাও বাড়ছে ।
বিভিন্ন জব পোর্টাল সাইট গুলো ভিজিট করলেই আপনি বুঝতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিং এখন কতটা জনপ্রিয়।
সুতারাং ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে ও শিখতে হবে ।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে জনপ্রিয় ক্যাটাগরি
ডিজিটাল মার্কেটিং নামটি ছোট মনে হলেও এর পরিধি অনেক বড়। আমরা তো সচরাচর ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে ফেইসবুক বুষ্ট এবং ইউটিউব অ্যাডকে বুঝে থাকি।
কিন্তু সত্যি বলতে ডিজিটাল মার্কেটিং পরিধি অনেক। ডিজিটাল মার্কেটিং হলো মেইন ক্যাটাগরি। আর এই মেইন ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে অনেক সাব ক্যাটাগরি।
সাব ক্যাটাগরি মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্যাটাগরি হলো- ইমেল মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), ফেসবুক বা মেটা মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং, মার্কেট রিসার্চ, ইউটিউব মার্কেটিং, গুগল এ্যাডস, সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং,ইকমার্স শপিং এ্যাডস ইত্যাদি
ডিজিটাল মার্কেটিং কী লাভজনক ক্যারিয়ার?
এখন একটা প্রশ্ন হয়তো আসতে পারে হচ্ছে, ডিজিটাল মার্কেটিং কী লাভজনক ক্যারিয়ার? আমি বলবো,অবশ্যই বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি লাভজনক ক্যারিয়ার।
কেননা প্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে সাথে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হচ্ছে। আর প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান চাই তাদের পন্য বা সেবা তাদের টার্গেটেড ব্যক্তির নিটক পৌছাতে ।
কোনো পন্য বা সেবা টার্গেটেড ব্যক্তির নিটক পৌছানোর সবচেয়ে কার্যকারি মাধ্যম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।
সুতারাং প্রতিনিয়ত যেমন হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পাচ্ছে তার সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল মার্কেটারের চাহিদাও বাড়ছে ।
তবে আপনি যদি মনে করেন, ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে এসে রাতারাতি সফলতা অর্জন করে ফেলবেন, সেটা সম্পূর্ণ ভূল।
এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে হলে লাগবে দক্ষতা। আপনি যত দ্রুত ডিজিটাল মার্কেটিং এ দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন ততো দ্রুত ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন।
শুরুতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি সাব ক্যাটাগরিতে (যেমন এসসিও) আপনাকে দক্ষ হতে হবে।
তারপর একটি কাজের পাশাপাশি আপনি চাইলে আরো ক্যাটাগতে দক্ষ চেষ্টা করবেন। এর জন্য আপনাকে প্রচুর পরিশ্রমি হতে হবে ।
ডিজিটাল মার্কেটিংএ দক্ষতা অর্জন করতে পারলে আপনি ঘরে বসে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সাথেও কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতেও রয়েছে প্রচুর চাহিদা ।
আবার আপনি যদি একজন ব্যবসায়ি হয়ে থাকেন তাহলে নিজের ব্যবসা উন্নতি করতেও কাজে লাগেতে পারেন।
আবার যদি আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চান তাহলে লিংকডইনে গেলেই দেখতে পারবেন প্রচুর চাকুরির সুযোগ রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং পেশায়।
মোটকথা একজন ডিজিটাল মার্কেটার দুই ভাবে ক্যারিয়ার গড়তে পারে-১.চাকরি ও ২. ফ্রিল্যান্সিং
একজন ডিজিটাল মার্কেটারের স্যালারি কত?
সাধারন স্যালারির বিষয়টা নির্ভর করে থাকে কোম্পানির কেমন, তাদের বিজনেসের আকার এবং একজন মার্কেটার এর অভিজ্ঞতার উপর।
তারপরে বলা যায় ইন্টার্ন হিসেবে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা এবং এই কাজে যখন আপনি স্পেশালিষ্ট হয়ে যাবেন বা ৮/১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হবেন তখন ৭০ থেকে ১৫০,০০০+ টাকা বা তার বেশি হতে পারে ।
একজন ডিজিটাল মার্কেটারের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী
একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে যেটি বেশি প্রয়োজন হবে সেটি হলো মার্কেটিং করার দক্ষতা।
তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অতি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও ইংরেজি ভাষা বুঝতে পারা এবং ইংরেজিতে যোগাযোগ করতে পারা বিষটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা , অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি কাজেগুলো যখন করতে যাবেন তখন ইংরেজি ভাষাটা আপনার প্রয়োজন হবে ।
এছাড়া আপনি যখন বিদেশি কোনো কোম্পানির সাথে কাজ করতে যাবেন তখন ইংরেজি ভাষায় তাদের কথপোকথন বা যোগাযোগ করতে হবে তাই ইংরেজিতে দক্ষতা না থাকলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ উন্নতি করতে পারবেনা।
তাই সব মিলেয়ে মোটামোটি এসএসসি বা এইচএসসি পাশের পরপরই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিজের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য চেষ্টা শুরু করতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেসপ্লেস
একজন ডিজিটাল মার্কেটার চাইলে চাকরি পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারে । ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য সেরা কিছু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেসপ্লেস হলো ফাইভার, আপওয়ার্ক, পিপল পার আওয়ার ।
এছাড়া আরো উপায় আছে যেগুলো কাজ করতে করতে আপনি নিজেই খুজে পেয়ে যাবেন।
একজন ডিজিটাল মার্কেটার কী ধরনের কাজ করে?
একজন ডিজিটাল মার্কেটার তার প্রতিষ্ঠানের জন্য নানা ধরনের কাজ করে থাকে । তবে আপনি যদি একটি নিদিষ্ট সেক্টর নিয়ে কাজ করে থাকেন তাহলে সেই কাজটি আপনিকে করতে হবে ।
যেমন- একজন ইমেইল মার্কেটার তার কোম্পানির পোডাক্ট বা সার্ভিস ক্রেতার নিকট পৌছাতে ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালবে, একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার কোম্পানির সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে পোষ্ট করা ও ইউজার দের সাথে যোগাযোগ করেবে ইত্যাদি।
নতুন হিসাবে কোন ক্যাটাগরি নিয়ে শুরু করলে ভালো হয়
এটা সম্পুর্ণ ভাবে আপানার উপর নির্ভর করে। তবে একদম নতুন হিসাবে স্ট্রাটেজিক প্লানিং, মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স ও অডিয়েন্স রিসার্চ,অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং ও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ।
এগুলোতে যখন দক্ষতা অর্জন করে ফেলবেন তখন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), ইমেইল মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং ইত্যাদি তে দক্ষতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করবেন।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় ভিজিটর আশাকরি সম্পূর্ণ পোষ্টি পড়ে আপনি একটি সঠিক সিন্ধান্ত নিতে পারেবন যে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কেমন। যেহেতু এটি অনেক বড় একটি সেক্টর তাই তাই এই সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না ।
সবকিছু সম্পর্কে জানার পার আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহেল দক্ষতার পাশাপাশি আপনাকের আরো কিছু কাজ করতে হবে । যাতে করে খুব সহজেই ক্যারিয়ারে উন্নতি দেখতে পান ।
কাজগুলো মধ্যে রয়েছে -লিংকডইন প্রোফাইল তৈরি করুন , আপনি যদি লেখেলেখি করত পছন্দ করেন তাহলে ব্লগিং শুরু করুন, নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করুন, সম্ভব হলে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে টিউটোরিয়াল দিন ।
মোটকথা আপনার অডিয়েন্স দের বোঝান যে আপনি এই সম্পর্কে অভিজ্ঞ। যাই হোক অনেক কথা হলো, কতটুকু ভালো হলো না বন্ধ হলো সেটা আপনিরাই ভালো বলতে পারবেন। যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আজএই পর্যন্ত, সম্পুর্ণ পোষ্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।